মাও. আমিনুল ইসলাম: কোরবানির চামড়া কালেকশন করাকে অনেকেই কওমি মাদরাসাগুলোর ঐতিহ্য বলে দাবি করেন। ঈদুল আজহায় পরিবার-পরিজনকে পেছনে ফেলে ‘ইলমে দ্বীনের খেদমত’ হবে ভেবে নিজ নিজ মাদরাসার পক্ষে কালেকশন করতে নামেন বর্তমানের অধিকাংশ আলেমগণ। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ব্যাপারটি মোটেও এমন নয়।
দেওবন্দি ঘরানার এমন বহু প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশেও বিদ্যমান আছে যেগুলো চাঁদা কালেকশন না করেও বিকল্প উপায়ে সুশৃঙ্খলভাবে চলছে। এতে বরং সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, অতীতের অনেক বড় বড় উলামায়ে কেরামও কওমি মাদরাসার জন্য এ ধরণের কালেকশন করাকে অপছন্দনীয় বলে মত দিয়েছেন। তারা এটাকে মাদরাসার শিক্ষক এবং বিশেষ করে তালিবুল ইলমদের জন্য মানহানিকর বলেও বর্ণনা করেছেন।
আমিরে শরিয়ত মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) বলেন– ‘মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও ছাত্ররা জাকাত-ফেতরার টাকা, খাস করে কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করার জন্য শহরের অলিতে-গলিতে ঘোরাফেরা করে। এটা দ্বীনের জন্য বড়ই বেইজ্জতির কথা। এতে মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের প্রতি মানুষের হেয় দৃষ্টি তৈরি হয়, যা ধর্মের জন্য ক্ষতিকর।’
তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, মাদরাসা কর্তৃপক্ষের প্রতি বিশেষ অসিয়ত থাকল, তারা যেন ছাত্রদের এভাবে চামড়া সংগ্রহ করতে না পাঠায়। বরং মাদরাসা প্রাঙ্গণে ও শহরের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প থাকবে। সেখানে মাদ্রাসাদরদী জনগণ নিজেদের দায়িত্বে চামড়া পৌঁছাবেন। আল্লাহ পাকের ওপর ভরসা করে মাদরাসা চালান। হেয়তাপূর্ণ কাজ বন্ধ করুন।’ (আমিরে শরিয়ত মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহ./ লেখক: নাসীম আরাফাত, পৃষ্ঠা: ১৯)