বিশেষ প্রতিনিধি: দীর্ঘদিনের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অমিল থাকায় সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হয়। সালিশের টাকা না পেয়ে ৬ মাসের গর্ভবতী গাভী বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে দালাল বাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সুমন হোসেন বাদশার বিরুদ্ধে।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ছোন্নাগো বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত বাদশা আসাদ উল্যাহ বেপারী বাড়ির আসাদ উল্ল্যার মেজো ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, জাহানারার স্বামী সিএনজি চালক হারুনের সাথে দীর্ঘদিন পারিবারিক কলহ চলে আসছে। তারই সূত্র ধরে স্বামী হারুন সোমবার দুপুরে দালাল বাজারের যুবলীগ নেতা বাদশার লোকজনকে নিয়ে জাহানারা বেগমের বাড়ি থেকে ৩টি গরু তুলে নিয়ে যায়। ৬ মাসের গর্বভর্তী গাভীকে দালাল বাজারের কসাইখানায় ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় বাদশার লোকজন। এতে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিকে জাহানারা বলেন, আমার স্বামী হারুন আজ থেকে ২০ বছর পূর্বে আমাকে বিয়ে করে। তিনি ৩ বছরের একটি শিশু সন্তান রেখে পাকিস্তান চলে যায়। সেদেশে বিয়ে করে ৩ সন্তান নিয়ে ২০১১ সালে দেশে ফিরলে তাকে আবার গ্রহণ করি। তিনি জুয়া খেলে ও মদ পান করে বাড়ি আসেন। সঠিকভাবে আমার বরণ পোষণ দিচ্ছেন না তিনি। আমাকে গাল মন্দ করে। বিগত কয়েক বছর ধরে তার সাথে আমার দন্ধ চলে আসছে। আমার স্বামী হারুন যুবলীগ নেতা বাদশাকে সালিশ করার জন্য কন্টাক করে।
গত ১৮ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে আমার গোয়াল ঘর থেকে তিনটি গরু জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যায় দালাল বাজারের বাদশার লোকজন। পরে রাত ৯টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মীর শাহ আলমের মাধ্যমে ২টি গরু উদ্ধার করি, ৬ মাসের গর্ববর্তী গাভী গরুটি বাদশার লোকজন ৪০ হাজার টাকা দামে বিক্রি করে দেয়। আমাকে গরু বিক্রির ৫ হাজার টাকা দিয়ে আমার স্বামী জানায় বাকি টাকা বাদশার লোকজন ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে গেছে। যার বাজার দর ৭০ হাজার টাকা।
স্ত্রী জাহানারার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সিএনজি চালক হারুন বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে আমার দন্ধ সংঘাতের কারণে যুবলীগ নেতা বাদশার লোকজনকে নিয়ে আমার গরু আমি নিয়ে আসি এবং বিক্রি করে বাদশাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি ১০ হাজার টাকার মধ্যে স্ত্রীকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। আমি ৫ হাজার টাকা ঋন পরিশোধ করি। বিনিময় বিচারও পেলাম না? গরুও গেলো, টাকাও গেলো!! স্ত্রী সাথে বিরোধ মিমাংশা হলো না। আমি এখন দালাল বাজারে বাসা ভাড়া করে থাকি।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম জানায়, ৩টি গরুর মধ্যে ২টি গরু উদ্ধার করে গরুর মালিক জাহানারার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ৬ মাসের গর্ভবতী গাভীটি বাদশার লোকজন ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা বাদশা গরু বিক্রির বিষয় অস্বীকার করে বলেন, গরু বিক্রি করেছে জাহানারার স্বামী সিএনজি চালক হারুন। স্বামী-স্ত্রী দুজনের দ্বন্দ্ব ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মীমাংসা করে দিয়েছি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম যুবলীগ আহবায়ক টিটু চৌধুরী জানায়, বাদশা যদি এসব কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেয়া হবে।