ঢাকা, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ জৈষ্ঠ্য ১৪৩১, ৮ শাবান ১৪৪৬

দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলে ফখরুলের নিন্দা



দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলে ফখরুলের নিন্দা

দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের ঘোষণায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

তিনি বলেন, বিএনপির মুখপত্র ও জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন ও মুদ্রণের ঘোষনাপত্র বাতিল করে দিয়েছে সরকার। সরকারের নির্দেশে গত ২৬ ডিসেম্বর দিনকালের ডিক্লারেশন ও পত্রিকা মুদ্রণের ঘোষনাপত্র বাতিল করে ডিসি। দৈনিক দিনকালের পক্ষ থেকে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন ও মুদ্রণ বাতিলের আদেশের স্থগিতাদেশ চেয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সেলে আবেদন করলে গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত ছিল। পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান নিশিরাতের সরকারের অধীনে গণমাধ্যমের যে কোন স্বাধীনতা নেই তা আবারও প্রমাণিত হলো। দৈনিক দিনকাল পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলের মুখপত্র হিসেবে ভূমিকা রাখছে। বিরোধী দলের একমাত্র পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল সরকারের চরম হিংসা চরিতার্থ করার বহিঃপ্রকাশ।

'সরকারের অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী কর্মকান্ড, চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, চরম দলীয়করণ, নির্বাচনের নামে প্রহসন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুৎ, জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী অসম চুক্তি, বিরোধী দলের ওপর দমন-নিপীড়ন, হত্যা, গুম, খুন, প্রহসনের সত্য সংবাদ দ্বিধাহীনভাবে প্রকাশ করায় দৈনিক দিনকাল সরকারের চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।'

তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষের কণ্ঠস্বর দৈনিক দিনকাল বন্ধের ফলে পত্রিকাটিতে কর্মরত হাজারো সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকারের নির্দেশে জেলা প্রশাসক পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলও পত্রিকাটির আপিল খারিজ করে দিয়েছে। এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর চরম আঘাত।

কয়েকদিন আগেই ১৯১টি অনলাইন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, তথ্যমন্ত্রী ভোটারবিহীন সরকারের সংসদে ক’দিন আগে বক্তব্য দিয়েছেন-গতমাসে ১০০টি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে এবং আরও শতাধিক বাতিল করা হতে পারে। এরই মধ্যে আজ বিরোধী দলের মুখপাত্র দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধ করা তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেরই প্রতিফলন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হয়। ১৯৭৫ সালের আওয়ামী লীগ সরকার চারটি সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ছাড়া বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। বর্তমান নিশিরাতের আওয়ামী সরকার তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করছে নতুন আঙ্গিকে। সে কারণে তারা সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালাচ্ছে এবং হুমকির সর্বগ্রাসী কর্তৃত্ব কায়েম করেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান দুঃসময়ে সব গণমাধ্যমের কর্মীদের শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের চরমভাবে নিগৃহীত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সরকারের সমালোচনা করায় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন।

দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন ও মুদ্রণের ঘোষনাপত্র বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।


   আরও সংবাদ