ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১২ রজব ১৪৪৭

‘মুজাহিদের শোকজ, খালেদা জিয়ার বরখাস্ত”



‘মুজাহিদের শোকজ, খালেদা জিয়ার বরখাস্ত”

জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদ তখন সমাজকল্যাণমন্ত্রী হিসেবে সকল শিশু সদন, এতিম খানার মতো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন। তিনি নিজে প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি করতেন। একদিন একটি এতিমখানার পরিচালককে ফোন দেন তিনি। জিজ্ঞেস করেন, "আজ দুপুরে বাচ্চাদের খাবার তালিকায় কী আছে?" পরিচালক জানান, "ইলিশ মাছ, সব্জি, আর ভাত।"

আগাম কোন সংবাদ না দিয়ে, মুজাহিদ  দুপুরে খাবারের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ঐ এতিমখানায় গিয়ে হাজির হন। পরিচালক দৌঁড়ে এসে তাকে অফিসে নিয়ে যেতে চান। মন্ত্রী গিয়ে ঢোকেন কিচেনে। হাড়ির ঢাকনা খুলতেই বোঁটকা গন্ধ এসে লাগে। উঁকি দিয়ে দেখেন ইলিশ নয় বরং পচাঁ সিলভার কার্প মাছ সেখানে। পরিচালক তড়িঘড়ি করে বলে, "মেন্যুতে ইলিশই ছিলো কিন্তু আজ বাজারে গিয়ে ইলিশ পাওয়া যায়নি। তাই....।" গন্ধের কারণ জানতে চাইলে বাবুর্চি কিছু বলতে পারেন না। মন্ত্রী বুঝেন একটা ঘাপলা আছে। পরিচালককে আলাদা করে একা কথা বলেন বাবুর্চির সাথে। জানতে পারেন, প্রতিদিনের পচাঁ বাসি খাবারের কথা। খাবারের রঙ আনতে ইটের গুড়া ভিজিয়ে সেই পানি খাবারে ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয় বলেও জানান তিনি। সেটাই দুর্গন্ধের কারণ।

মুজাহিদ পরিচালককে তাৎক্ষণিক শোকজ করেন। গাড়ি করে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হওয়া মাত্রই প্রধানমন্ত্রীর ফোন আসে। তিনি মুজাহিদ এর কাছে জানতে চান, এতিমখানায় কী হয়েছে।"

মুজাহিদ সব খুলে বলেন। বেগম জিয়া বলেন, "আপনি সরাসরি আমার অফিসে আসেন।"

মুজাহিদ অফিসে ঢুকলেই বেগম জিয়া  বলেন, "সে আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে, বিএনপি করার জন্যে আপনি তাকে শোকজ করেছেন। তা বলেন, কী শাস্তি দিলেন?"

মুজাহিদ শোকজ করার কথা বললে, তিনি বলেন, "ভুল বিচার হয়েছে।" বলেই তিনি টেবিলে রাখা একটি খাম তুলে দেন। সেখানে পরিচালকের বহিষ্কার আদেশ। বেগম জিয়া বলেন, "এতিমের খাবার নিয়ে যে এরকম করে, তাকে আবার শোকজ কী! আপনি রাস্তায় থাকার সময়ই বহিষ্কার আদেশ রেডি করিয়েছি। আপনি সিগনেচার করে পাঠিয়ে দিন আর আইনানুগ ব্যবস্থা নিন।"

দূর্নীতির বিরুদ্ধে তার এই অবস্থান মুজাহিদ বারবার উল্লেখ করতেন।


   আরও সংবাদ