পাঠ্যবই নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে ছাপানো বইয়ে যা নেই, তা উপস্থাপন করা হচ্ছে। এডিট করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তারা শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাইয়ের পদ্ধতি বহাল রাখতে এসব কাজ করছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা মগজ ধোলাইয়ের শিকার হবে না। তারা ভাবতে শিখবে, পৃথিবীকে জানবে। তাদের সেই চিন্তা ও মননশীলতার জায়গাটা স্বাভাবিক রাখতে সরকার সবকিছু করবে।’
শিক্ষামন্ত্রী শনিবার দুপুরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) চতুর্থ সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. হাসিনা খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী নাবিল আহমেদ, ঝিনাইদহ-৩ আসনের এমপি শফিকুল আজম চঞ্চল, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, সামরিক-বেসামরিক কমকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চায়। এ জন্য স্মার্ট নাগরিক গড়তে শিক্ষার কোনও বিকল্প নেই। স্মার্ট নাগরিক তৈরিতে সহায়ক শিক্ষাক্রম নিয়ে কাজ করছে সরকার। একটি চক্র এই শিক্ষাক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পদ্ধতি প্রসঙ্গে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আগামীতে জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় আছে তারা তাদের সিটের অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করবেন না। সারা পৃথিবীর মতো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিতে আগামীতে একটি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। ঘন ঘন পরীক্ষা অর্থবহ না।
‘আগামীর বিশ্বে তাল মেলাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে হবে। পাঠদানের পাশাপাশি পাওয়া জ্ঞানকে কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় যেতে হবে।’
অনুষ্ঠানের সমাবর্তন বক্তা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. হাসিনা খান বলেন, ‘আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হলে গবেষণার কোনও বিকল্প নেই। এক রোমাঞ্চকর অনুভূতির মধ্য দিয়ে গবেষণার সময় অতিবাহিত হয়। গবেষণায় আসলে নতুন নতুন বিষয় জানার সুযোগ রয়েছে। ফলে যাদের সুযোগ আছে তাদের গবেষণায় আসতে হবে।’
সমাবর্তনে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে এক হাজার ৮৩৪ জন গ্র্যাজুয়েট অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বাবা-মা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এবারের সমাবর্তনে ২২ জন গ্র্যাজুয়েট চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক, ২৬ জন ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড এবং ৯ জন ডিন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।